হারিয়ে যাওয়া নদীকে ফিরে পেতে চাই

9টি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সেচ ব্যবস্থা, বন্য নিয়ন্ত্রণ এবং জলবিদ্যুত উত্পাদন ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনে কমপক্ষে 90টি বাঁধ ও জলাধার নির্মাণের পরিকল্পনা আছে, সব মিলিয়ে বদলে যাচ্ছে নদীর চরিত্র। নদী যাচ্ছে শুকিয়ে, নদী যাচ্ছে হারিয়ে, শুকিয়ে যাওয়া নদী কৃষিকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে অর্থাত নদী চুরি হয়ে যাচ্ছে, সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ অবস্থার দিকে আমরা এগুচ্ছি।



নদীর স্রোত রুদ্ধ হতে থাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নকাজে নদীর ব্যবহার এবং নদীর নিজস্ব নিয়মের স্রোতে ভেসে আসা প্রচুর পরিমাণে পলি। এই পলি তৈরী হয় নদী অববাহিকার ভূমিক্ষয়, নদীর জলঘর্ষণে নদীপাড়ের মাটি পাথর ক্ষয়, রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে মাটি পাথরের ক্ষয়, উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহের পচনে উদ্ভূত অম্লপ্রভাবে নদীর জলে পাথরের ক্ষয় ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, প্রায় সারা বছর বিভিন্নরকম ফসল উত্পাদনের জন্য জলসেচে, শিল্পের অগ্রগতির জন্য, সুষ্ঠ পানীয় জলের জন্য জলের ব্যবহার ও অন্যান্য কাজে ক্রমবর্ধমান জলের চাহিদা। জলের গতিশক্তিকে ব্যবহার করে জলবিদ্যুত উত্পাদনের কাজে নদীর জল ব্যবহার করা, ছোট বড় মাঝারী মাপের বাঁধ বা জলকে আটকে রাখার প্রায় অবৈজ্ঞানিক পরিকল্পনার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জলের স্বাভাবিক গতিপথকে রুদ্ধ করা হয়েছে। ফলতঃ প্রায় সব নদীই এখন মৃতপ্রায়। এছাড়াও নদীর জলে যুক্ত হতে থাকে নদী পার্শ্বস্থ কল, কারখানা ও শহরের অপরিশোধিত দূষিত জল, শহরের জঞ্জাল, ফলতঃ নদীর জলের স্বাভাবিক শুদ্ধতার মান ক্রমহ্রাসমান।

যদিও কখনো কখনো বর্ষার জলস্রোত দু-কূল ছাপিয়ে ভাসিয়ে দেয় গ্রামের পর গ্রাম, বানভাসি মানুষ, জীবজন্তুর প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারিয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে দিশেহারা হয়ে পড়ে। তবুও দেখা যাচ্ছে নদীর গতি পরিবর্তন, জলের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, 9টি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সেচ ব্যবস্থা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং জলবিদ্যুত উত্পাদন ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনে কমপক্ষে 90টি বাঁধ ও জলাধার নির্মাণের পরিকল্পনা আছে, সব মিলিয়ে বদলে যাচ্ছে নদীর চরিত্র। নদী যাচ্ছে শুকিয়ে, নদী যাচ্ছে হারিয়ে, শুকিয়ে যাওয়া নদী কৃষিকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে অর্থাত নদী চুরি হয়ে যাচ্ছে, সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ অবস্থার দিকে আমরা এগুচ্ছি।

ভারত সরকার ব্যপারটার গুরুত্ব উপলব্ধি করে এবং যেহেতু দেশের মধ্যে গঙ্গাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নদী ও গঙ্গা নদীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক বিরাট এলাকার জনস্বাস্থ্যের প্রশ্ন, তাই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলির মিলিত উদ্যোগে 1985 সালে গঠিত হয়েছিলো সেণ্ট্রাল গঙ্গা অথরিটি নামে এক তদারকী সংস্থা। এই সংস্থাটি গঙ্গা ও তার উপনদীগুলির দূষণ রোধের জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শুধু গঙ্গা, যমুনা নয়, ভারতের আরো কয়েকটি নদীর ( যেমন,- দামোদর, কৃষ্ণা, ব্রাহ্মণী, বৈতরণী, সুবর্ণরেখা, সবরমতী) দূষণ সম্পর্কে সমীক্ষা কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে এবং আরো নদী ( মন – কাবেরী, গোদাবরী, মহানদী, মাহী, ব্রহ্মপুত্র, নর্মদা, তাপ্তী ও সিন্ধু ) সম্পর্কেও সমীক্ষার কাজ চলছে।

ইতিমধ্যে ভারত সরকার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, গঙ্গাকে দিয়েই শুরু করেছে, পরবর্তী পর্যায়ে ভারতবর্ষের সমস্ত বড় নদীকেই এই পরিকল্পনার আওতায় আনা হবে। যদিও প্রাথমিক ভাবে মনে হতে পারে এটা শুধু দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্যই করা হয়েছে, কিন্তু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে নদীর চরিত্র, গতি, বেগ, নাব্যতা সমস্ত কিছুই এসে যাবে, পুনরুদ্ধার হবে হরিয়ে যাওয়া নদীগুলি। সে কারণে নোটিফিকেশনটা হুবহু তুলে ধরা হল ভবিষ্যতের কারণে সকলের জ্ঞাতার্থে।

Constitution of National Ganga River Basin Authority (NG RBA) on 20th February 2009 by Central Government for Planning, Monitoring and Co-ordination Authority for Effective Abatement of Pollution and Conservation of river Ganga.

The main objectives are –
1. To ensure effective abatement of pollution and conservation of river Ganga by adopting a river basin approach to promote intersectional co-ordination or comprehensive planning and management.

2. To maintain minimum ecological flow in the river Ganga with the aim of ensuring water quality and environmentally sustainable development.

আসুন, আমরা সকলে নদীকে বাঁচাই, নিজেদের ও সকলের বাঁচার তাগিদে, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করার প্রয়োজনে।

सम्पर्क


ড. অরুণকান্তি বিশ্বাস
প্রাক্তন পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা ও ডেপুটি ডাইরেক্টর, ন্যাশানাল এনভায়রনমেণ্টাল ইঞ্জিনীয়ারিং রির্সাচ অনস্টিটিউট (নিরী), কলকাতা


ডঃ অরুণকান্তি বিশ্বাস
প্রাক্তন পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা ও ডেপুটি ডাইরেক্টর, ন্যাশানাল এনভায়রনমেণ্টাল ইঞ্জিনীয়ারিং রির্সাচ অনস্টিটিউট (নিরী)কলকাতা

Posted by
Get the latest news on water, straight to your inbox
Subscribe Now
Continue reading