আর্সেনিক পিড়িত এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশ


থাইল্যাণ্ডের নাথোন শ্রীথামারাট প্রদেশের রন পিরুন জেলায় আর্সেনিক বিষণ ধরা পড়ল 1987 সালে l রন পিরুন শহরে আশপাশের অঞ্চলগুলিতে ত্বকে আর্সেনিকের প্রতিক্রিয়া লক্ষণ দেখা গেল হাজারখানেক মানুষের মধ্যে l শতবর্ষ ধরে এই অঞ্চলে টিন খনিজ উত্তোলন ও ধাতু নিষ্কাশনের পর এখন তা বন্ধ হয়েছে l আর্সেনিক পাইরাইট বর্জ্য স্তুপই এই অঞ্চলের ভূগর্ভ ও ভূতল জলের আর্সেনিকের প্রধান উত্স l

ভিয়েতনাম


ভিয়েতনামে হ্যানয় শহরের আশপাশে আর্সেনিক ঘটিত ভূগর্ভজল উঠছে সম্প্রতি কিছু কাল ধরে l বিধিমতো যথেষ্ট সমীক্ষা না হলেও আর্সেনিক রোগলক্ষণ কিছু রোগীর দেহে দেখা দিয়েছে l এখানেও ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভে লোহিত নদী অববাহিকায় প্রয়োজনীয় সমীক্ষা না করেই নলকূপ বসিয়ে গেছে l গভীর ও অগভীর সবরকম অ্যাকুইফারের জলেই বেশি পরিমানে আর্সেনিক পাওয়া গেছে l ভূগর্ভজল অবাতায়িত বিজারণ ধর্মী হওয়ায় আর্সেনিক As(III) অবস্থাতেই বেশি থাকবার সম্ভাবনা l মেকং অববাহিকায় ভূগর্ভজল তোলা হয় না, কারণ বদ্বীপের ঐ অঞ্চলের জল নোনা l

লাওস ও কাম্বোডিয়া


মেকং নদীর কিয়দংশ কাম্বোডিয়া, লাওস ও থাইল্যাণ্ডের মধ্য দিয়ে গেছেl এখানকার অ্যাকুইফার সাম্প্রতিক হলোসিন যুগের l উর্বর নদী অববাহিকার প্রচুর জনবসতি l এইসব অঞ্চলের ভূগর্ভজলে আর্সেনিকের অনুসন্ধান, পরীক্ষা-নিরীক্ষাও কম হয়েছে l আর্সেনিক রোগাক্রান্ত মানুষও বিশেষ দেখা যায় নি এখন পর্যন্ত l

থাইল্যাণ্ড


থাইল্যাণ্ডের নাথোন শ্রীথামারাট প্রদেশের রন পিরুন জেলায় আর্সেনিক বিষণ ধরা পড়ল 1987 সালে l রন পিরুন শহরে আশপাশের অঞ্চলগুলিতে ত্বকে আর্সেনিকের প্রতিক্রিয়া লক্ষণ দেখা গেল হাজারখানেক মানুষের মধ্যে l শতবর্ষ ধরে এই অঞ্চলে টিন খনিজ উত্তোলন ও ধাতু নিষ্কাশনের পর এখন তা বন্ধ হয়েছে l আর্সেনিক পাইরাইট বর্জ্য স্তুপই এই অঞ্চলের ভূগর্ভ ও ভূতল জলের আর্সেনিকের প্রধান উত্স l এতে শতকরা প্রায় তিরিশ ভাগ পর্যন্ত আর্সেনিক আছে l এখানকার পলি অঞ্চলের মাটিতেও কেজি প্রতি পাঁচ গ্রাম আর্সেনিক পাওয়া যায় l আর্সেনোপাইরাইটের জারণঘটিত কারণে ভূগর্ভ জলে আর্সেনিক আসে। অগভীর নলকুপে 5000 µg /L আর্সেনিক পাওয়া যায়। জল ঈষত অম্লধর্মী, তাতে সালফেট, ক্যাডমিয়াম অ্যালুমিনিয়াম, বেরিলিয়াম, জিঙ্ক ও কপার পাওয়া যায় l জলের আর্সেনিক বেশির ভাগই As(V) l

নেপাল


নেপালের তরাই এর নিম্নাঞ্চলে কোয়াটার্নারি সেডিমেণ্টের পাললভূমিতে প্রায় 11 মিলিয়ন মানুষের প্রয়োজন মেটাতে দুই লক্ষ নলকূপের ব্যবস্থা হয়েছে l অগভীর অ্যাকুইফারগুলি প্রায়শই অনাবদ্ধ ( unconfined ) l গভীর অ্যাকুইফারগুলি সাধারণত আর্টেজিয় l তরাইয়ের অন্তবর্তী রাওতাহাট, নওলপরাশি, পার্সা ও বরা অঞ্চলে আর্সেনিক বেশি আক্রান্ত l পার্সার একটি স্থানে জলে 343 µg /L আর্সেনিক পাওয়া গেছে l বাগমতী নদী উপত্যকাতেই আর্সেনিক বেশি l এখন পর্যন্ত নেপালে আর্সেনিক ঘটিত অসুখ-বিসুখ বেশি দেখা যায় নি l কাঠমাণ্ডু ও অন্য কিছু পর্বত মধ্যবর্তী উপত্যকায় পলির গভীরতা তিন শতাধিক মিটার l কাঠমাণ্ডু উপত্যকাতেও কোনও আর্সেনিক সমস্যা এখনও দেখা যায় নি, তবে অনুসন্ধানও বিশেষ হয় নি l

পাকিস্তান


পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও সিন্ধুপ্রদেশে সিন্ধুনদী উপত্যকার বদ্বীপীয় পলিভূমিতে আর্সেনিক থাকার সম্ভাবনা l শুষ্ক অঞ্চল হওয়ায় এখানে জলাভাব l অধিক বাতায়িত হবার কারণে জলে আর্সেনিকের সম্ভাবনা বেশি নয় l তবে সিন্ধু প্রদেশের কোনও কোনও জলের স্যাম্পলে 180-250 µg /L আর্সেনিক পাওয়া গেছে l পাকিস্তানে আর্সেনিকের সমীক্ষাও কম হয়েছে l আর আর্সেনিক রোগগ্রস্ত মানুষজনও দেখা যায় নি l তবে ফ্লোরিন ঘটিত অসুখ-বিসুখের সম্ভাবনাই এখানে বেশি l

মায়ানমার


মায়ানমারে ( পূর্বতন ব্রহ্মদেশ ) জলের চিরাচরিত উত্স ছিল খনিত কুয়ো, পুকুর, ঝরনা, নদী l 1990- এর দশকে ইরাবতী নদীর অববাহিকায় কিছু টিউবওয়েল বসানো হয়েছে এবং তাতে কোনও কোনও জায়গায় ....50 µg /L এর বেশি আর্সেনিক পাওয়া গেছে l তবে মোটামুটি ভাবে বলা যায়, আর্সেনিক সমস্যা এখনও এসব অঞ্চলে তত প্রকট ভাবে দেখা যায় নি l

ফিলিপিনস


মিনদানাও ভূতাপীয় বিদ্যুত্কেন্দ্র নিঃসারিত আর্সেনিকের দরুন কিছু সমস্যা আছে l

জাপান


আর্সেনিক বিষণের ভয়ঙ্কর কিছু দুর্ঘটনা অতীতে জাপানে ঘটে গেছে l জাপানে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য সযত্নে সুরক্ষিত l তবে স্মরণ রাখা যেতে পারে যে, আগ্নেয়গিরি ও ভূতাপীয় উত্স প্রচুর থাকায় পরিবেশে আর্সেনিকের আগমন অবশ্যম্ভাবী l 1992 সালে জাপানের জলে আর্সেনিকের গ্রহণযোগ্য সর্বেচ্চ মাত্রা 50 থেকে নামিয়ে 10 µg /L এ এনেছে l

सम्पर्क


মণীন্দ্র নারায়ণ মজুমদার
প্রাক্তন অধ্যাপক, রসায়ন বিভাগ, ডীন ফ্যাকল্টি অফ সায়েন্স, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়


Source: Extract from the book titled “Banglay Arsenic: Prokiti O Pratikar” written by Prof. Manindra Narayan Majumder

Posted by
Get the latest news on water, straight to your inbox
Subscribe Now
Continue reading