রাজস্থানের রজত বিন্দু

12 Dec 2016
0 mins read

পধারো মাহরে দেশ


মরুভূমির ভাগ্যবান সমাজ কিন্তু এই বর পেয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকেনিl জল সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজে নিজেদের নিয়োগ করেl গ্রামে গ্রামে, স্থানে-স্থানে বর্ষার জলকে ধরে রাখার রীতি তৈরীর কথা ভাবতে থাকে এবং বিভিন্ন রীতি তৈরী হতে থাকে এইভাবেl

অতীতে কখনও এখানে সমুদ্র ছিল l ঢেউ-এর পরে ঢেউ উঠত l কালের ঢেউয়ে না জানি কেন ও কীভাবে সেই অথৈ সমুদ্র শুকিয়ে গেছে l আজ এখানে চতুর্দিকে বালির সমুদ্র l ঢেউয়ের পরে ঢেউ এখনও ওঠে l

প্রকৃতির এক বিশাল রূপকে অন্য আরেক বিশাল রূপে - সমুদ্র থেকে মরুভূমিতে বদলাতে হয়তো লক্ষ লক্ষ বছর লেগেছে l এই নতুন রূপের পরিণতিও হয়তো হাজার হাজার বছর হয়ে গেল, কিন্তু রাজস্থানের সমাজ সেই প্রথম রূপটিকে আজও ভোলেনি l তারা নিজেদের মনের গভীরে আজও তাকে ‘হাকড়ো’ নামে স্মরণে রেখেছে l প্রায় হাজার বছরের পুরোনো ডিঙ্গল ভাষায় এবং আজকের রাজস্থানিতেও এই হাকড়ো শব্দ সেই প্রজন্মের ঢেউয়ে ভেসে বেড়ায়, যাদের পূর্বপুরুষেরাও কখনও সমুদ্র দেখেনি1 l

বর্তমান মারওয়াড়ের পশ্চিমে লক্ষ লক্ষ বছর আগে প্রচলিত হাকড়ো শব্দ ছাড়াও রাজস্থানের হৃদয়ে সমুদ্রের আরও অনেক নাম রয়েছে l সংস্কৃত থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সিন্ধু, সরিতাপতি, সাগর, ওয়ারাধিপ- এর মতো শব্দ তো রয়েইছে, এছাড়াও অচ, ওঅহ, দেধান, ওডনীর, ওয়ারহর, সফরা-ভাণ্ডার প্রভৃতির মতো সম্বোধনও পাওয়া যায় l আরও একটি নাম হল ‘হেল’ l এই হেল শব্দটিতে সমুদ্রের সঙ্গে সঙ্গে উদারতা ও বিশালতাকেও বোঝানো হয়েছে l

এটা রাজস্থানেরই উদারতা বলতে হবে যে এই বিশাল মরুভূমিতে থেকেও তাদের কণ্ঠে সমুদ্রের এত নাম পাওয়া যায় l এই দৃষ্টিভঙ্গিটিও নিশ্চয় বড়ই বিচিত্র ছিল l বিশ্বে যে ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ লক্ষ বছর আগে, যা ঘটতেও হয়তো লেগেছে হাজার হাজার বছর, সে সবের যদি কেউ হিসেব করতে বসে তাহলে পরিসংখ্যানের অনন্ত অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া ছাড়া কীই বা হতে পারে l জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা লক্ষ কোটি মাইলের দূরত্বকে আলোকবর্ষ দিয়ে মেপে থাকেন, কিন্তু রাজস্থানের মানুষ তো দীর্ঘ-দিনের এই এত এত কঠিন গুণ, ভাগ চোখের পলকেই করে ফেলেছে l এই বিরাট ঘটনাকে তারা ‘পলক-দরিয়ার’ শব্দের মধ্য দিয়ে মনে রেখেছে l পলক ফেলতেই সমুদ্রের শুকিয়ে যাওয়া এবং ভবিষ্যতে ক্ষণিকের মধ্যেই আবার সেই শুষ্ক স্থান সমুদ্রে পরিণত হওয়ার ব্যাঞ্জনা এই শব্দের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত l

এই যে বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি, যা সময়ের অন্তহীন প্রবাহকে এক একটি খণ্ড ও বিচ্ছিন্ন মুহূর্তে অনুভব করতে পারে; বিরাটত্ব ও বিশালতাকে একটি কণায় নিহিত বলে ভাবতে পারে – সেই দৃষ্টিভঙ্গি হাকড়োকে হারিয়ে ফেলেছে l তবে হাকড়োকে হারিয়ে ফেললেও তার জলের বিশালতাকে এক একটি কণা, এক একটি বিন্দুর মধ্যে উপলব্ধি করতে পেরেছে l এই সমাজ নিজেদের এমন কিছু রীতিতে ঢেলে সাজিয়েছে যে, অখণ্ড সমুদ্র যেন খণ্ড খণ্ড হয়ে ঠাঁই-ঠাঁই অর্থাত্ জায়গায় জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে l

চতুর্থ শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরু করে দেশের যোজনা কমিশন পর্যন্ত রাজস্থানের, বিশেষ করে মরুভূমির যে ছবি দেখানো হয়েছে তা এক শুষ্ক, জনহীন ও পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের l থর মরুভূমির বর্ণনা তো এমনভাবে করা হয়েছে যে ভয়ে বুক শুকিয়ে আসে l শুধুমাত্র যদি মধ্যপ্রদেশকে বাদ দেওয়া যায় তাহলে ক্ষেত্রফলের বিচারে দেশের সমস্ত রাজ্যর মধ্যে দ্বিতীয় বড় রাজ্য হল রাজস্থান (বর্তমানে মধ্যপ্রদেশ বিভক্ত হওয়ার পর রাজস্থানই দেশের সব চেয়ে বড় রাজ্য) l জনসংখ্যা হিসেবে নবম স্থানে রয়েছে রাজস্থান; কিন্তু ভূগোলের সব বইয়ে-ই বর্ষার ক্ষেত্রে তার স্থান সকলের শেষে l

পুরোনো পদ্ধতি অনুযায়ী ইঞ্চিতে বা নতুন পদ্ধতি মতো সেণ্টিমিটারে মাপা হোক, বর্ষা এখানে সব থেকে কম l সারা বছরে গড় বৃষ্টিপাত ষাট সেণ্টিমিটার l দেশের গড় বৃষ্টিপাত মাপা হয়েছে একশো দশ সেণ্টিমিটার l এই হিসেব অনুসারেও রাজস্থানের বর্ষা ঠিক অর্ধেক-ই দাঁড়ায় l কিন্তু এই যে পরিসংখ্যান যেগুলো গড়ের হিসেব দিচ্ছে - সেগুলোও এখানকার সঠিক চিত্র দিতে পারে না l রাজ্যের ও প্রান্ত থেকে এ প্রান্ত কখনই একই পরিমাণে বৃষ্টি হয় না l কোথাও তা একশো সেণ্টিমিটারের বেশি তো কোথাও পঁচিশ সেণ্টিমিটারেরও কম l

ভূগোল বইগুলো এই অঞ্চলের বর্ষাকে ও প্রকৃতিকে এক অতি কৃপণ মহাজনের মতো চিত্রিত করেছে l আর রাজ্যের পশ্চিম অংশকে দেখিয়েছে এই মহাজনের সব থেকে নির্দয় শিকার হিসেবে l এই অঞ্চলেই পড়ে জয়সলমের, বিকানের, চুরু, যোধপুর ও শ্রীগঙ্গানগর l এখানে আবার কার্পণ্যের ভিতরেও কার্পণ্য দেখা যায় l অর্থাত্ এক কথায়- বর্ষার বিতরণ ভীষণই অসমান l রাজ্যের পূর্ব থেকে পশ্চিমে যেতে যেতে বর্ষা ক্রমশই কমতে থাকে l পশ্চিমে এসে তা সূর্যের মতোই ক্রমেই অস্তগামী হয় এবং এ পর্যন্ত পৌঁছে মাত্র যোলো সেণ্টি মিটার বৃষ্টিই সে দিতে পারে l এই পরিমাণের তুলনা করুন দিল্লির সঙ্গে, একশো পঞ্চাশ সেণ্টি মিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয় সেখানে l তুলনা করুন গোয়ার সঙ্গে এবং চেরাপুঞ্জি বা কোঙ্কনের সঙ্গে, যেখানে এই পরিমাণটা পাঁচশো থেকে হাজার সেণ্টিমিটার পর্যন্ত ছুঁয়ে যায় l

মরুভূমিতে সূর্যই বর্ষিত হয় গোয়া, চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির মতো l জল কম, গরম বেশি - এই দুটো বিষয় যেখানে এক হয়ে যায় সেখানে তো জীবন সঙ্কটময় হয়ে ওঠার কথা, অন্তত সেরকমই মনে করা হয়l পৃথিবীর অন্যান্য মরুভূমিতেও এ রকমই গরম পড়ে, এই পরিমাণ-ই বৃষ্টি হয় l তাই সেখানে বসতিও খুব কমই গড়ে উঠেছে l কিন্তু রাজস্থানের মরুভূমিতে পৃথিবীর অনান্য মরুভূমির তুলনায় বসতি শুধু বেশিই নয়, সেই বসবাসে জীবনের সুগন্ধও রয়েছে l পৃথিবীর অন্যান্য মরুভূমির তুলনায় এই ক্ষেত্রটি অনেক অনেক জীবন্ত l

এর রহস্য লুকনো রয়েছে এখানকার সমাজে l জলের স্বল্পতার কান্না কখনও কাঁদেনি রাজস্থানের সমাজ l এই সমস্যাটিকে তারা চ্যালেঞ্জের মতো করে গ্রহণ করেছে এবং এই চ্যালেঞ্জের উত্তরে ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত নিজেদের এমনভাবে প্রস্তুত করেছে যে এখানে জলের স্বভাব সমাজের স্বভাবের থেকেও সরল ও তরলভাবে বয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে l

এই বহতা স্বভাবের সঙ্গে পরিচিত না হলে কখনোই বোঝা যাবে না যে, এখানে বিগত এক হাজার বছর ধরে জয়সলমের, যোধপুর, বিকানের ও জয়পুরের মতো বড় শহরও কীভাবে গড়ে উঠতে শুরু করে l আর এই বেড়ে ওঠা যেমন তেমন ভাবে নয় যথেষ্ট ভদ্র ভাবে l এই শহরগুলির জনসংখ্যা কিছু কম ছিল না l এত কম বৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও এসব শহরের জীবনযাত্রা দেশের অন্য কোনো শহরের তুলনায় কম সুবিধাজনকও ছিল না l এই শহরগুলির প্রতিটিই ইতিহাসের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দীর্ঘকাল পর্যন্ত শক্তি, সামর্থ, বাণিজ্য ও শিল্পে বিশিষ্ট কেন্দ্র রূপে পরিচিত হয়েছে l যখন মুম্বাই, কলকাতা বা মাদ্রাজের মতো বর্তমান সময়ের বড়-বড় শহরগুলির ভূমিকা পর্যন্ত রচিত হয়নি তখনই জয়সলমের আজকের ইরান আফগানিস্তানের থেকে শুরু করে রাশিয়ার কোনো কোনো অংশ পর্যন্ত বাণিজ্যের বড় কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল l

রাজস্থানের সমাজ নিজেদের জীবন দর্শনের গভীরতা দিয়েই স্পর্শ করেছে জীবনের, শিল্পের, বাণিজ্যের ও সংস্কৃতির এক উচ্চ সীমা l এই জীবনদর্শনে জল সংগ্রহের কাজ এক বড় ও মর্যাদাপূর্ণ স্থান অধিকার করে রয়েছে l ওই ঐতিহ্যকে অবশ্যই কিছুটা বিনষ্ট করেছে বর্তমান যুগের অপূর্ণ বিকাশের তথাকথিত আধুনিক অগ্রগতি l তবে পুরোপুরি নষ্ট করে ফেলতে পারেনি l

এখানে জলসংগ্রহের কাজে ভাগ্য ও কর্তব্য – দুইই রয়েছে l একে তো ভাগ্যই বলতে হবে - মহাভারতের যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে পর শ্রীকৃষ্ণ কুরুক্ষেত্র থেকে অর্জুনকে সঙ্গে নিয়ে এই রাস্তা দিয়েই দ্বারকায় ফিরছিলেন l তাঁদের রথ চলেছিল মরুভূমির ওপর দিয়ে l বর্তমান জয়সলমেরের কাছে এসে তাঁরা দেখেন উত্তুঙ্গ ঋষি তপস্যা করেছেন l শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে প্রণাম করে বলেন যে, তিনি তাঁর তপস্যায় প্রসন্ন হয়েছেন তাই উত্তুঙ্গ ঋষিকে তিনি বর দিতে চান l উত্তুঙ্গ শব্দের অর্থ উঁচু l ঋষি সত্য - সত্যই অনেক বড় মনের মানুষ ছিলেন l তিনি নিজের জন্য কিছুই চাইলেন না l প্রভুর কাছে প্রর্থনা করলেন, ‘যদি আমার কিছুমাত্র পুণ্যও থেকে থাকে, তাহলে হে ভগবান, বর দিন যেন এই এলাকায় জলের অভাব না থাকে’ l

ভগবান বর দিয়ে বলেছিলেন ‘তথাস্তু’ l

মরুভূমির ভাগ্যবান সমাজ কিন্তু এই বর পেয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি l জল সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজে নিজেদের নিয়োগ করে l গ্রামে গ্রামে, স্থানে - স্থানে বর্ষার জলকে ধরে রাখার রীতি তৈরীর কথা ভাবতে থাকে এবং বিভিন্ন রীতি তৈরী হতে থাকে এইভাবে l

এখানে রীতির একটি পুরোনো প্রতিশব্দ পাওয়া যায়, ‘ওয়জ’ l ওয়জ শব্দটি রচনা, যুক্তি এবং উপায়ের অর্থে তো ব্যবহার হয়ই, তা ছাড়াও সামর্থ, বিবেক ও বিনম্রতা বোঝাতেও এই শব্দের প্রয়োগ হয়ে এসেছে l বর্ষার প্রতিটি বিন্দুকে সংগ্রহ করার ওয়জ হয়ে এসেছে বিবেকের সঙ্গে এবং বিনম্রতা সহকারে l এখানের সমাজ বৃষ্টিকে ইঞ্চি বা সেণ্টিমিটারে নয়, এমনকী আঙুল বা বিত্তাতেও নয়, সম্ভবত বিন্দুতে বিন্দুতে মাপা হয়েছিল l তারা জল বিন্দুগুলিকে রুপোর বিন্দুর মতো দেখেছে এবং খুবই সহজভাবে ওয়জ -এর সঙ্গে এই তরল বিন্দুগুলিকে সংগ্রহ করে নিজেদের জলের প্রয়োজন মেটাবার এমন এক বিরাট ঐতিহ্য তৈরী করেছে l আর এর স্বচ্ছ ধারা ইতিহাস থেকে বেরিয়ে বর্তমানকাল পর্যন্ত বয়ে চলেছে এবং বর্তমানকেও ইতিহাসে পরিণত করার ‘ওয়জ’ অর্থাত্ সামর্থ রাখে l

রাজস্থানের পুরোনো ইতিহাসে মরুভূমি বা কাছাকাছি অন্যান্য স্থানেরও যা বর্ণনা পাওয়া যায়, তা কখনই শুষ্ক, জনহীন বা অভিশপ্ত নয় l মরুভূমির জন্য বর্তমানে প্রচলিত শব্দ ‘থর’-ও খুব একটা পাওয়া যায় না l দুর্ভিক্ষ হয়েছে ঠিকই, কোথাও কোথাও জলের কষ্টও ছিল, কিন্তু গৃহস্থ থেকে শুরু করে সন্ন্যাসী, কবি থেকে মাঙ্গাণিয়ার বা লাঙ্গারা2; এছাড়াও হিন্দু, মুসলমানরা সকলেই একে ‘ধরতি ধোরা রি 3 বলেছে l মরুভূমির পুরোনো নামে ‘স্থল’ পাওয়া যায় l যা সম্ভবত হাকড়ো অর্থাত্ সমুদ্র শুকিয়ে গেলে যে স্থলের উত্পত্তি হয় তারই ইঙ্গিত l এবার স্থল হল থল এবং তার থেকে মহাথল l আবার মুখের ভাষায় থল হল থলি এবং ধরধুধল l থলি তো একটা মোটা দাগের পরিচিতি রূপেই রয়েছে l সূক্ষ্ম সূক্ষ্মতর বিচারে তা বিভিন্ন স্থানে আলাদা আলাদা নামে পাওয়া যায় l মাড়, মারওয়াড়, মেওয়াড়, মেরওয়াড়, দুঁদার, গোডওয়াড়, হাড়ৌতি -র মতো বড় বিভাজন আবার দসরেক এবং ধন্বদেশ -এর মতো ছোট বিভাজনও ছিল l আর এই বিরাট মরুস্থলে ছোট বড় যত রাজাই থাকুক, নায়ক তো একজনই, শ্রীকৃষ্ণ l এখানে তাঁকে খুবই স্নেহের সঙ্গে মরুনায়কজি বলে ডাকা হয় l

মরুনায়কজির বরদান এবং সমাজের নায়কদের ওয়জ, সামর্থ্যের এক অভূতপূর্ব সংযোগ তৈরী করে l এই সংযোগ থেকেই ওয়জতো - ওজতো অর্থাত্ প্রত্যেকে গ্রহণ করতে পারে এই রকম সরল ও সুন্দর এক রীতির জন্ম হয়েছে l নীচে ধরিত্রীর উপর দিগন্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা অতীত যুগের হাড়কো ওপরের আকাশে যেন মেঘ হয়ে উড়তে থাকে l এই মেঘের পরিমাণ হয়তো কমই, কিন্তু মানুষ মেঘের মধ্যস্থিত ওই জলকে ইঞ্চি বা সেণ্টিমিটারে না দেখে অগণিত বিন্দু রূপে দেখেছে ও একে মরুভূমিতে তথা সারা রাজস্থানে ঠিক বিন্দুর মতোই ছড়িয়ে থাকা টাঁকা, কুণ্ড - কুণ্ডি, বেরি, জোহড়, নাডি, তালাব, বাউড়ি কুয়ো, কুঁই এবং পার গুলিতে ভরে নিয়ে উড়ে চলা সমুদ্রকে অথবা অখণ্ড হাকড়োকে যেন খণ্ডে-খণ্ডে নীচে নামিয়ে এনেছে l

যশঢোল অর্থাত্ প্রশংসা করা l রাজস্থান নিজেদের অপূর্ব জলসংগ্রহের এই ঐতিহ্য নিয়ে তথাকিথত যশের ঢোল কোনোদিন বাজায়নি l আজ দেশের প্রায় সব ছোট-বড়, শহর-গ্রাম, বিভিন্ন রাজ্যের রাজধানী এমনকী আমাদের দেশের রাজধানীও যথেষ্ট বর্ষা হওয়া সত্ত্বেও জলের জোগান দিতে সম্পূর্ণ অসফল হয়েছে বলা যায় l দেশের জল সরবরাহের ব্যাপারে এই অসফলতা, বধিরতা নিয়ে আসার আগেই শুষ্ক নামে পরিচিতি পাওয়া রাজস্থানের মরুভূমির জল সংগ্রহের যে পরিপূর্ণ বৃহত্ ঐতিহ্য রয়েছে তার ঢাকঢোল বাজানোই উচিত l

পধারো মাহরে দেশ l

Posted by
Get the latest news on water, straight to your inbox
Subscribe Now
Continue reading