তথ্যসূত্র : পধারো মাহরে দেশ

Published on
7 min read


কোনো এক সময় মরুভূমিতে ঢেউ তোলা হাকড়োর শুকিয়ে যাওয়ার ঘটনা, রাজস্থানের হৃদয় ‘পলক দরিয়াব’ -এর মতোই গ্রহণ করে l ঢেউ তোলা হাকড়োর সময় বা কালের বোধের ব্যাপকতাকে আমাদের স্মৃতির সাহায্যেই বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে l এই কাল দর্শনে আমাদের তিনশো পঁয়ষট্টি দিনকে এক দিব্য দিন ধরা হয়েছে l তিনশো দিব্য দিনে হয় এক দিব্য বর্ষ l সত্য যুগের সময় সীমা বলা হয়েছে চার হাজার আটশো (4,800) দিব্য বছর, তিন হাজার ছশো (3,600) দিব্য বছরে হল ত্রেতা যুগ, আর দ্বাপর দু হাজার চারশো (2,400) বছরের এবং কলিযুগের সময় সীমা ধার্য করা হয়েছে এক হাজার দুশো (1,200) দিব্য বছর l এই হিসেবকে যদি আমাদের বছরে বদলানো যায় তাহলে সত্য যুগের সময় সীমা দাঁড়াবে সতেরো লক্ষ আঠাশ হাজার (17,28,000) বছর, ত্রেতা যুগ হবে বারো লক্ষ ছিয়ানব্বই (12,96,000) হাজার বছর, আর দ্বাপর আট লক্ষ চৌষট্টি হাজার (8,64,000) বছর এবং কলিযুগ দাঁড়াবে চার লক্ষ বত্রিশ হাজারে (4,32,000) l শ্রীকৃষ্ণকে আমরা পাই দ্বাপরে l যখন তিনি হাকড়ো ক্ষেত্রে এসেছিলেন তখনও মরুভূমি ছিল l অর্থাত পলক দরিয়ারের ঘটনা তার থেকেও আগে কখনও ঘটেছিল l একটা গল্প এই ঘটনাকে ত্রেতা যুগ পর্যন্ত নিয়ে যায় – শ্রীরামচন্দ্রের শ্রীলঙ্কা আক্রমণ। মাঝে সমুদ্র রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে ছিল। রামচন্দ্র তিন দিন উপবাসের পর পুজো করেন l এই প্রার্থনার পরও রাস্তা না পেয়ে রামচন্দ্র ধনুকে বাণ চড়ান, সমুদ্রের জল শুকিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। সমুদ্র দেবতা প্রকট হন, ক্ষমা প্রর্থনা করেন; কিন্তু বাণ তো ধনুকে চড়ানো হয়ে গিয়েছিল, তার কী হবে ? কথিত আছে সমুদ্রের পরামর্শেই বাণ সেই দিকে ছোঁড়া হয় যেদিকে হাকড়ো ছিল l এভাবেই ত্রেতা যুগে হাকড়ো শুকিয়ে যায় l

সমুদ্রের ধারের জমিকে ফার্সিতে বলে ‘শীখ’ l বর্তমান মরুভূমির এক অংশ হল শেখাওটি l বলা হয় - কখনও এই পর্যন্ত সমুদ্র ছিল l হকীম য়ুসূফ ঝুঁঝুনওয়জির বই ‘ঝুঁঝুনূঁ কা ইতিহাস’ -এ এর বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে l জয়সলমেরের পুরোনো নথিতেও হাকড়ো শব্দ স্থান পেয়েছে l দেবীসিংহ মাণ্ডওয়া -র বই ‘শার্দুলসিংহ সেখাওত’, শ্রী পরমেশ্বর সোলাঙ্কির -র বই ‘মরুপ্রদেশকা ইতিবৃত্তাত্মক বিবেচন’ (প্রথম খণ্ড), বই দুটিও এখানে যে সমুদ্র ছিল সে বিষয়ে অনেক তথ্য দিয়ে থাকে l এখানে পাওয়া জীবাশ্মগুলিও এর আরও একটি প্রমাণ l তাছাড়াও রয়েছে জনসাধারণের মনে ভেসে বেড়ানো নামগুলি এবং তার সঙ্গে যুক্ত লোকগাথাগুলি l

পুরোন ডিঙ্গল ভাষায় সমার্থক শব্দের বিভিন্ন অভিধানে ঢেউয়ের মতই সমুদ্রের নাম পাওয়া যায় l অধ্যায়ে এগারোটি নাম দেওয়া হয়েছে, পাঠক ইচ্ছে করলে সেখানে এগুলিও জুড়ে নিতে পারেন :



সনুন্দ্রা কুমার অঁবধি সরিতাঁপতি ( অখ্যঁ )
পরাওয়ারাঁ পরঠি উদধি ( ফির ) জলনিধি ( দখ্যঁ ) l
সিন্ধু সাগর ( নাঁম ) জাদপতি জলপতি ( জপ্পঁ ),
রতনাকর ( ফির রটহু ) খীরদধি লওয়ন ( সুপপ্পঁ ) l
( জিল ধাঁম নাঁম জজাঁল জে সটমিট জায় সঁসার রা,
তিণ পর পাজাঁ বঁধিয়াঁ ও তিণ নাঁমাঁ তার রা ) l

এই নামগুলি কবি হররাজের রচিত ডিঙ্গল নামমালা থেকে নেওয়া হয়েছেl কবি নাগরাজ পিঙ্গল, তার ‘নাগরাজ ডিঙ্গল’ অভিধানে সমুদ্রের নামগুলি এই ভাবে বর্ণনা করেছেন :



উদধ অঁব অঁথাগ অচ উধারণ অলিয়ল,
মহণ ( মীন ) মহরাঁণ কমল হিলোহল ওয়্যাকুল l
বেলাওল ওহিলোল ওয়ার ব্রহমণ্ড নিধুওয়র,
অকুপার অণথাগ সমন্দ দধ সাগর সায়র l
অতরহ অমোধ চড়তও অলীল বোহত অতেরুডুবওণ,
( কব কবত ওহ পিঙ্গল কহৈবীস নাঁম ) সামন্দ (তণ ) l l

কবি হমীরদান রতনু রচিত ‘হমির নামমালায়’, সমুদ্রের নামের মালায় আরও কয়েকটি নতুন নাম জুড়ে দেন :



মথণ মহণ দধ উদধ মহোদর,
রেণয়র সাগর মহরাঁণ
রতনাগর অরণও লহরীরও,
গৈডীরও দরীআও গম্ভীর l
পারাওয়ার উধধিপত মছপতি,
(অথগ অম্বহর অচল অতীর) l l
পতিজল পদমালয়াপিত l
সরসওয়ান সমান্দ,
মহাসর অকূপার উদভব - অম্রতি l l

এর পরও যে দু’ চারটে নাম এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকে যায় কবিরাজ মুরারিদান সেগুলি একত্রিত করেছেন :



সায়র মহরাণ স্রোতপত সাগর দধ রতনাগর মগণ দধী,
সমন্দ পয়োধর বারধ সিন্ধু নদীঈসবর বানরথী l
সর দরিয়াব পয়োনধ সমদয় লখমীতাত জলধ লওয়ণোদ,
হীলোহল জলপতী বারহর পারাওয়ার ওদধ পাথোদ l
সরতঅধীস মগরঘর সরবর অরণও মহাকচ্ছ অকুপার,
কলব্রছপতা পয়ধ মকরাকর ( ভাখাঁ ফির ) সফরীভণ্ডার l l

জলের থেকে বেরিয়ে আসা মরুভূমির হৃদয় এই ভাবে সমুদ্রের এত নাম এখনও স্মরণে রেখেছে এবং সেই সঙ্গে তারা এটাও বিশ্বাস করে যে মরুভূমি আবার এক দিন সমুদ্রে পরিণত হবে :



হক কর বহসে হাকড়ো বন্ধ তুট সে অরোড়
সিন্ধড়ি সুখো জাওসী, নির্ধনিয়ো রে ধন হোওসী
উজড়া খেড়া ফির বসসী, ভাগিয়ে রে ভূত কমাওসী
ইক দিন এয়সা আওসী l

হাকড়ো পরবর্তী সময় সমুদ্র থেকে দরিয়াব, দরিয়াব থেকে দরিয়া অর্থাত নদী হয়ে যায় l এই এলাকারই লুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাচীন নদী সরস্বতীর সঙ্গে তখন হাকড়োকে এক করে দেখা হত l আজ এই এলাকায় মিষ্টি ভূ - জলের ভাণ্ডার যথেষ্ট ভাল বলে স্বীকৃত হয়েছে l আর একে ঐ নদীগুলিরই চুঁইয়ে আসা জল বলে মনে করা হয় l রাজস্থানের সীমানা পার করে পাকিস্তানের সখখর জেলাতে অরোড় নামক স্থানে একটা বাঁধ রয়েছে; একদিন এমন আসবে যেদিন বাঁধটি ভেঙে যাবে l সিন্ধু শুকিয়ে যাবে, ভর-ভরন্ত গ্রামগুলি উজাড় হয়ে যাবে, উজাড় হয়ে যাওয়া গ্রামগুলি আবার ফিরে বসতি স্থাপন করবে, ধনী নির্ধন হবে, নির্ধন ধনী হবে একদিন এমনই আসবে l

হাকড়োর প্রারম্ভিক তথ্য ও রাজস্থানীতে সমুদ্রের কিছু নাম আমরা পাই শ্রীবদরীপ্রসাদ সাকরিয়া ও শ্রীভূপতিরাম সাকারিয়া সম্পাদিত ‘রাজস্থানী হিন্দি শব্দকোষ’, পঞ্চশীল প্রকাশন জয়পুর থেকে l তবে আমাদের এটি ঠিকঠাক বোধগম্য হয় শ্রী দীনদয়াল ওঝা ( কেলাপাড়া জয়সলমের ) এবং শ্রী জেঠু সিং ভাটি ( সিলাওটপাড়া জয়সলমের ) -র সঙ্গে হওয়া কথা বার্তায় l ‘ইক দিন এয়সা আওসী’ সময়ের অপেক্ষায় গাওয়া এই গাঁথাটিও শ্রী জেঠু সিং -এর কাছেই পাই l ডিঙ্গল ভাষায় সমুদ্রের নামগুলি পাই, নারায়ণ সিং ভাটি সম্পাদিত রাজস্থানী গবেষণা কেন্দ্র চৌপাসনি, যোধপুর থেকে 1957 সালে প্রকাশিত ডিঙ্গল কোষ থেকে l রাজ্যের বর্ষার পরিসংখ্যান রাজস্থানি গ্রন্থাগার যোধপুর থেকে প্রকাশিত শ্রী ইরফান মেহর -এর বই ‘রাজস্থান কা ভূগোল’ থেকে পাই l রাজস্থানের বিভিন্ন জেলায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিসংখ্যানটি নিম্নরূপ l

জেলা

গড় বৃষ্টিপাত (সে.মি)

জেলা

গড় বৃষ্টিপাত (সে.মি)

জয়সলমের

16.40

আলওর

61.13

শ্রীনগর

25.37

টৌঁক

61.36

বিকানের

26.37

উদয়পুর

62.45

বাড়মের

27.75

সিরোহি

63.84

যোধপুর

31.87

ভরতপুর

67.15

চুরু

32.55

ধোলপুর

68.00

নাগৌর

38.86

সওয়াইমাধোপুর

68.92

জালৌর

42.16

ভিলওয়াড়া

60.90

ঝুঁঝনু

44.45

ডুঙ্গরপুর

76.15

সিকর

46.61

বুঁদি

76.41

পালি

49.04

কোটা

88.92

আজমের

52.73

বাঁসওয়াড়া

92.24

জয়পুর

54.82

ঝালওয়াড়া

104.47

চিতোরগড়

58.21

  

নতুন জেলাগুলির পরিসংখ্যন পাওয়া যায় নি l

সারা বছরে মাত্র 16.40 সেণ্টিমিটার বৃষ্টি হয় যে জয়সেলমেরে সেই জয়সলমের দীর্ঘ সময় ইরান, আফগানিস্থান থেকে রাশিয়া পর্যন্ত ব্যাবসার কেন্দ্রবিন্দু ছিল l আর এই ব্যাবসায়িক কারণে জয়সলমেরের ছবি পৃথিবীর মানচিত্রে কত উজ্জ্বল ছিল তার পরিচয় পাওয়া যায় – ‘জয়সলমের খাদি গ্রামোদ্যোগ পরিষদ’ ভাণ্ডারের দেওয়ালে টাঙানো এক মানচিত্রে l তখন কলকাতা, বোম্বাই, মাদ্রাজের নাম গন্ধও ছিল না l

মরুনায়ক শ্রীকৃষ্ণর মরু যাত্রা ও বরদানের বিষয়টি, আমরা প্রথম দেখি শ্রী নারায়ণ পাল শর্মা -র বইতে l

থর রাজ্যের পুরোনো নামে মরুমেদনী, মরুধন্ব, মরুকান্তার, মরুধর, মরুমণ্ডল এবং মারও-এর মতো নাম অমর কোষ, মহাভারত, প্রবন্ধ চিন্তামণি, হিতোপদেশ, নীতিশতক, বাল্মীকি রামায়ণ প্রভৃতি সংস্কৃত বই গুলিতে পাওয়া যায় এবং এগুলি মরুভূমির অর্থে কম বরং নির্মল এক অঞ্চল হিসেবেই বেশি অর্থে এসেছে l

মাটি, জল ও তাপের তপস্যা

যদি অগ্রহায়ণের প্রথম বা দ্বিতীয় পক্ষে অথবা পৌষের প্রথম পক্ষে সকালে কুয়াশা হয় তাহলে বর্ষা ভাল হবে :


পৌষ আধাঁরি দশমি, চমকৈ বাদল বীজ l
তৌর ভর বরষৈ ভাদবৌ, সায়ধন খলৈ তিজ l l

যদি পৌষ কৃষ্ণা দশমীর বৃষ্টিতে বিদ্যুত চমকায়, তাহলে পুরো ভাদ্র ভর বৃষ্টি হবে l এবং স্ত্রীরা তিজ উত্সব ভালভাবেই করতে পারবে :


পোহ সবিভল পোখজৈ, চৈত নিরমল চঁন্দ l
ডঙ্ক কহ হে ভডড, মন হুঁতা অন চন্দ l l

যদি পৌষে ঘন মেঘ দেখা যায় ও চৈত্রের শুক্ল পক্ষে চাঁদ স্বচ্ছ দেখা যায়, অর্থাত আকাশে মেঘ না থাকে তাহলে আনাজ টাকা মন-এর থেকেও সস্তা হবে :


ফাগন ওয়দি সু দুজ দিন, বাদল হোয়ে বিজ l
বরষে শাঁওন ভাদয়ৌ, সাজন খেলৌ তিজ l

lযদি ফাল্গুন কৃষ্ণা দ্বিতীয়ার দিন বৃষ্টি না হয়, বিদ্যুত না চমকায় তাহলে শ্রাবণ ও ভাদ্রে ভালো বর্ষা হবে l অতএব হে স্বামী, তিজ ভালোভাবে পালন করো l

বৃষ্টি যেখানে সব থেকে কম, সেখানে বৃষ্টির সব থেকে বেশি নাম পাওয়া যায় l এই লম্বা তালিকায় প্রায় চল্লিশটি নামের প্রথম ঝাপটা আমরা ‘রাজস্থানি-হিন্দি শব্দকোষ’ -এর সাহায্যে করতে পেরেছি l বিভিন্ন ডিঙ্গল শব্দকোষ থেকে আরও কিছু নাম এতে জুড়ে দেওয়া যেতে পারে l কবি নাগরাজের ‘ডিঙ্গলকোষ’ মেঘের নাম গুণে থাকে নিম্ন রূপে :

পাওয়স প্রথবিপাল বসু হব্র বৈকুষ্ঠবাসী,
মহিরঞ্জণ অম্ব মেঘ ইলম গাজিতে – আকাসী l
নৈণে – সঘণ নভরাট ধ্রওয়ন পিঙ্গল ধরাধর,
জগজীবন জীমূত জলঢ় জলমণ্ডল জলহর l
জলওয়হণ অভ্র বরসন সুজল মহত কলায়ন(সুহামনা), পাস্জন্য মুদির
পালগ ভরণ ( তীস নাম ) নীরদ ( তণা ) l l
শ্রী হামিরদান রতনু বিরচিত ‘হামির নামমালা’ -য় মেঘের নামের যে ছটা পাওয়া যায় তা –
পাওয়স মুদর বকাহক পালগ,
ধরাধর ( ওয়ালি ) জলধরন l
মেঘ জলদ, জলবহ জলমণ্ড,
ঘন জগজীবন ঘণাঘণ l l
তড়াতওয়ান তোঈদ তনয়ন্তু,
নীরদ ওয়ারসন ভরন – নিওয়ান l
অভ্র পরজন নভরাট আকাসি,
কাঁমুক জলমুক মহত কিলাঁণ
( কোটি সঘন সোভা তন কাঁন্থড়,
স্যাঁম ত্রেভূঅণ স্যাম সরীব l
লোক মান্থি জম জোর ন লাগৈ,
হাথি জোড়ি হরি সমর হমীর ) l l

শ্রী উদয়রাম বারহঠ বিরচিত ‘অবধান-মালা’ -তে বাকি নামগুলি সাজিয়ে নেওয়া হয়েছে এই ভাবে :


ধারাধর ঘণ জলধরণ মেঘ জলদ জলমণ্ড,
নীরদ বরসণ ভরণনদ পাওয়স ঘটা ( প্রচণ্ড )l
তড়িতওয়ান তোয়দ তরজ নিরঝর ভরণনিওয়াণ,
মুদর বলাহক পালমহি জলদ ( ঘণা ) ঘণ ( জাঁণ )l
জগজীওয়ন অভ্রয় রজন ( হু ) কাম কহমত কিলাঁণ,
তনুয়তু নভরাট ( তব ) জলমুক গয়ণী ( জা, ণ ) l l

ডিঙ্গল অভিধানের অন্য এক তালিকায়, যেখানে কবির নাম পাওয়া যায় না, সেখানে বৃষ্টির আরও কিছু নাম পাওয়া যায় : -


মেঘ জলদ নীরদঁ জলমণ্ডণ,
ঘণ বরষণ নভরাট ঘণঘণ l
মহত কিলাণঁ আকাসী জলমুক,
ধারাধর পাওস অভ্র জলভুর,
পরজন l তড়িতওয়াঁন তোয়দ ( পর ) সঘণ তনয় ( তু ) স্যমঘটা ( সজি ),
গঁজণরোর নিওয়াঁণভর গজি l

কবিরাজ মুরাদিদানের রচিত তালিকাও ঘন কালো মেধের মতোই ছেয়ে রয়েছে l তবে এখানে এসেও আমরা দাঁড়াতে পারি :


মেঘ ঘনাঘন ঘণ মুদির জীমুত ( র ) জলওয়াহ,
অভ্র বলাহক জলদ ( অখ ) নমধুজ ধূমজ ( নাহ ) l l

ডিঙ্গল অভিধানের এই তথ্য আমরা পাই শ্রী নারায়ণ সিংহ ভাটি সম্পাদিত, রাজস্থানি গবেষণা কেন্দ্র চৌপাসনি, যোধপুর থেকে 1957- তে প্রকাশিত ‘ডিঙ্গল অভিধান’ -এ l বৃষ্টির স্বভাব, রঙ্গ, রূপ, তাকে এক দিক থেকে অন্য দিকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া, কোনো পাহাড়ের ওপর তার একটুখানি বিশ্রাম করে নেওয়া প্রভৃতির প্রারম্ভিক তথ্য রাজস্থানী হিন্দি অভিধান থেকে নেওয়া হয়েছে l

আজকের জমানাতেও আমরা ‘জামানো’ শব্দটির অর্থ ঠিক - ঠাক ভাবে বুঝতে পারি, জনসত্তার সম্পাদক শ্রী ওমথানবি -র কাছে l তাঁর ঠিকানা হল – 186 বি, ইণ্ডাসট্রিয়াল এরিয়া, চণ্ডীগড় l শ্রী থানবি 1987 সালে – ‘সেণ্টার ফর সায়েন্স এণ্ড এনভায়রনমেণ্ট’, নতুন দিল্লি -র একটি ফেলোসিপে রাজস্থানের জল সংগ্রহ বিষয়ে একটি বিস্তৃত প্রবন্ধ লেখেন এবং সেই ঐতিহ্যের দৃষ্টান্তগুলি তুলে ধরার জন্য কিছু ছবিও তোলেন l জ্যৈষ্ঠর প্রশংসায় গোয়ালাদের গান, এবং মাসেদের পারস্পরিক কথাবার্তায় জ্যৈষ্ঠের শ্রেষ্ঠতার গল্প, বৃষ্টির ক্রিয়া কলাপ তুঠনো থেকে শুরু করে উবরেলো অর্থাত বর্ষার জল সংগৃহীত করার পুরো প্রক্রিয়াটি আমরা বুঝতে পারি ‘রাজস্থানি-হিন্দি শব্দকোষ’ থেকে l

রাজস্থানের রজতবিন্দু

থেমে থাকা জল নির্মল

বিন্দুতে সিন্ধু

জল ও অন্নের অচ্ছেদ্য সম্পর্ক

জ্ঞানী ও সোজা সরল গোয়ালার সঙ্গে যে কথোপকথন তা আমরা জানতে পারি শ্রী জেঠু সিং -এর কাছে l পূর্ণ সংবাদটি হল :


সুরজ রো তো তপ ভালো, নদী রো তো জল ভলো
ভাঈ রো তো বল ভলো, গায় রো তো দুধ ভলো
চারোঁ বাতোঁ ভলে ভাই, চারোঁ বাতোঁ ভলে ভাই
সূর্যের তাপ ভালো, নদীর জল, ভাইয়ের বল ভালো এবং গাইয়ের দুধ l এই চার ভালই হয় l

গোয়াল উত্তর দেয় :


আখঁ রো তো তপ ভালো, করাখ রো তো জল ভলো
বাহু রো তো বল ভলো, মা রো তো দুধ ভলো
চাঁরো বাতোঁ ভলে ভাই, চারোঁ বাতোঁ ভলে ভাই
তপস্যা হল চোখের, অর্থাত অনুভবই কাজে লাগে l পানি ‘করাখ’ অর্থাত কাঁধের ওপর ঝোলানো কুঁজোর জল l নিজের বাহুবল-ই কাজে আসে এবং দুধ ? মায়ের দুধের কোন তুলনা হয় না রে ভাই l

আধুনিক কৃষি বিজ্ঞানীরা বলবেন বর্ষার পরিস্থিতি অনুযায়ী গোটা মরুভূমিই গম চাষের উপযুক্ত নয় l যারা খডিন তৈরি করেছিল এটা তাদেরই চমত্কারিত্ব বলতে হবে যে কয়েকশো বছর আগে থেকে তারা কয়েকশো মণ গম কেটে চলেছে l পলিওয়াল ব্রাহ্মণদের জন্যই জয়সলমের রাজ্য আনাজ ও ভুসিতে সমৃদ্ধ হয়েছিল l

দইবাধ বা দেবিবাঁধ-এর পরিচয় আমাদের দেন শ্রী জেঠু সিং ও শ্রী ভগবানদাস মহেশ্বরী l ঐ এলাকায় প্রকৃতি দেবী যতগুলি এইরকম স্থান তৈরি করেছেন তার মধ্যে এমন কোনো জায়গা নেই যেটি সমাজ চোখের তপস্যায় দেখতে পায়নি l এই অচ্ছেদ্য সম্পর্ক এখানে চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে l শিক্ষিত সমাজ যদি পড়তে না পারে, সে কথা আলাদা l

ভুনের বারো মাস

স্বাবলম্বী সমাজ

संबंधित कहानियां

No stories found.
India Water Portal - Hindi
hindi.indiawaterportal.org